টুনটুনি আর মোটা বিড়াল – Bangla Fairy Tale

 

এক কৃষকের ঘরের পিছনে বেগুন গাছ আছে। সেই বেগুণ গাছের পাতা ঠোঁট দিয়ে সেলাই করে টুনটুনি পাখিটি সেখানে তার বাসা বেঁধেছে। 

বাসার ভিতর তিনটি ছোট্ট-ছোট্ট ছানা হয়েছে। খুব ছোট্ট ছানা, তারা উড়তে পারে না, চোখও মেলতে পারে না। 

খালি হাঁ করে আর চীঁ-চীঁ করে। 

সেই কৃষকের বাড়িতে ছিল মোটা কেঁদো একটা বিড়াল। বিড়ালটা ছিল খুবই দুষ্টু। সে খালি ভাবে ‘টুনটুনির ছানা খাব।’ 

একদিন সে বেগুন গাছের তলায় এসে বলল, ‘কি করছিস রে টুনটুনি?’ 

টুনটুনি তার মাথা হেঁট করে বেগুণ গাছের ডালে ঠেকিয়ে বললে, ‘সেলাম, মহারানী! তাতে বিড়ালনী ভারি খুশি হয়ে চলে গেল।’ 

এমনি সে রোজ আসে, রোজ টুনটুনি তাকে প্রণাম করে আর মহারানী বলে, আর সে খুশি হয়ে চলে যায়। 

এখন টুনটুনির ছানাগুলি বড় হয়েছে, তাদের সুন্দর পাখা হয়েছে। তারা আর চোখ বুজে থাকে না। তা দেখে টুনটুনি তাদের বলল, ‘বাবারা, তোরা উড়তে পারবি?’ 

ছানারা বললে, হ্যাঁ মা, পারব। 

টুনটুনি বললে, ‘তবে দেখ তো দেখি, ঐ তাল গাছটার ডালে গিয়ে বসতে পারিস কি না।’ 

ছানারা তখনই উড়ে গিয়ে তাল গাছের ডালে বসল। 

তা দেখে টুনটুনি হেসে বললো, এখন বজ্জাত বিড়াল আসুক দেখি! এমন 

মজা দেখাবো যে সারা জীবনের শিক্ষা হয়ে যাবে। 

এর খানিক বাদেই বিড়াল এসে বলল, ‘কি করছিস রে টুনটুনি?’ 

তখন টুনটুনি পা উঁচিয়ে তাকে লাথি দেখিয়ে বললো, ‘দূর হ, লক্ষ্মীছাড়ী, পাজী, বদমাইশ, হতচ্ছাড়ি বিড়াল! 

এই কথা বলেই সে ফুরুৎ করে উড়ে পালাল। 

পাজী বিড়ালটা তখন দাঁত খিঁচিয়ে লাফিয়ে গাছে উঠতে গেলো, কিন্তু না পারলো টুনটুনিকে ধরতে, না পারলো ছানাদের খেতে। 

শুধু শুধু বেগুন কাঁটার খোঁচা খেয়ে নাকাল হয়ে ঘরে ফিরল।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url